১/১১ এ শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করলো। তখনতো আমিতো বড় কোন নেতাকে দেখলাম না এই শহরে। আজকে যারা হুঙ্কার দেয়, মুহুর্তের মধ্যে সবকিছু করে ফেলবে। বলে ‘দু:সময় চলতেছে, এই হচ্ছে, সেই হচ্ছে। তারা কোথায় ছিলেন ভাই? এত বড় বড় কথা কন? কাউকেই তো দেখলাম না চোখে। এই আমরাই গুটি কয়েক নেতৃবৃন্দুই তখন মিছিল করলাম, মিটিং করলাম। চিল্লাচিল্ল করলাম। আমার ছোট ভাই উজ্জল এখনও মামলার আসামী।
জাতিয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে জেলা শ্রমিক লীগের আয়োজিত এক সভায় মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভী।
এ সময় শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে আইভী আরও বলেন, আবার দল ক্ষমতায় এলে এই আমাদেরেই একটা গ্রুপ দ্বারা এমন ভাবে নির্যাতিত হই, মামলা-হামলার শিকার হতে হয়। হকার নয়, কতিপয় নেতৃবৃন্দ এক বড় ভাইয়ের নির্দেশে, আমার উপর হামলা হইলো। সেই হামলার কারণে মামলা করছি, ৯ জনের বিরুদ্ধে। তার জন্য নাকি আমি একদম মহা ভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছি। এই রকম মামলা করলে আপনাদের বিরুদ্ধে এই আলোচনা থেকেই ১০, ২০ কিংবা ৫০টা করে মামলা করা কথা ছিল। আপনার ভাগ্য ভালো আপনি বেঁচে গেছেন, আমি মামলা মোকদ্দমা করি না বলে। আমরা দলকে সংগঠিত করি। দলের কাজ করি, মানুষের কল্যাণে কাজ করি। জন কল্যাণে কাজ করি। এ সকল কাজ করতে গিয়ে আপনার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার সময় পাই না। আপনার বিরুদ্ধে আমাদের মাথা ঘামানোর সময় নাই।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, নির্বাচনের বছরে আপনি এ্যাকটিভ হয়ে যান। আপনার এই এ্যাকটিভ হওয়ার হুঙ্কার, দুঙ্কার বন্ধ করেন। শেখ হাসিনার জন্য কাজ করেন, জন কল্যাণে কাজ করেন। অন্যথায় আপনার অবস্থান এখনই কিন্তু নাই, আরও থাকবে না। এই শহরের মানুষকে এত বেশি অত্যাচার করা হয়েছে, নেতৃবৃন্দকে করা হয়েছে। কর্মীদের করা হয়েছে, যা বলে বুঝানোর ভাষা নাই। সুতরাং আমরা নিশ্চুপে কাজ করে যাচ্ছি। সেই কাজ গুলো করার সুযোগ দেন।
তিনি বলেন, একজন রানিং সহসভাপতি বিএনপির। তাকে ধরে এনে কোন কারণে কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বানিয়ে দিলেন? আপনার লজ্জা করে না। আপনিই না বারবার বিএনপির বিপক্ষে কথা বলেন। ইউনিয়ন পরিষদের সব গুলো চেয়ারম্যান আপনি বিএনপির লোক বানিয়ে রেখেছেন। সেন্টু কি কোন দিন জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু বলবে? গত পরশু যে আপনি এত বড় মিছিল করলেন? কৈ আপনার মিছিলে কেন সেন্টু আসলো না। কেন ওই খানে দাঁড়িয়ে জয় বাংলা জয়, বঙ্গবন্ধু বললো না। বঙ্গবন্ধুর গুনগান কেন করলো না? আপনি টাকার বিনিময়ে মানুষকে দলে নিয়ে আসেন এবং টাকার বিনিময়ে অনেকের ক্ষতি করে ফেলেন। এই কাজ গুলো থেকে দয়া করে বিরত থাকুন। আমরা একত্রিত হয়ে কাজ করতে চাই, আপনার ভয়ে অনেকেই আমাদের সাথে এসে কাজ করতে চায় না। দলের মধ্যে আপনি সবচেয়ে বেশি বিবেধ তৈরি করেন। আপনি প্যাট্টোনাইস করেন জামাত-বিএনপিকে, আপনি প্যাটোনাইস করেন হেফাজতের ফেরদৌসকে। আপনি ফেরদৌসকে কাজে লাগাচ্ছেন এখন জাহাঙ্গির আলমের বিরুদ্ধে। আপনি এই সমস্ত-সব বন্ধ করেন, না হলে আপনার পরিনতি খুব খারাপ হবে বলে দিলাম।
জাতীয় শ্রমিক লীগের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুস ছামাদের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।
আরও উপস্থিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট আনিছুর রহমান দিপু, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম প্রমুখ।