নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাদক বিক্রি করতে দেখে ফেলায় তুহিন নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি এলাকার মোল্লা বাজারের একটি ফার্নিচারের দোকান থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন পুলিশ।
নিহত তুহিন পিরোজপুর ইউনিয়নের চেঙ্গাকান্দি গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। সে তার মামা নুরুল হুদার ঝাউচর এলাকার ফার্নিচার দোকানে কাজ করতো। মামাই তাকে পালক ছেলে হিসেবে দেখাশুনা করতো।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, “পিরোজপুর ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন চেঙ্গাকান্দি এলাকার মোল্লা বাজারে অবস্থিত মেসার্স এন এইচ ট্রেডার্স নামে ফার্নিচারের দোকানে কাজ শেষে রাতে তুহিন দোকানেই ঘুমাতো। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টায় বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে সে দোকানে ঘুমাতে যায়। তার বাবা বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টায় তার জন্য হোটেল থেকে নাস্তা কিনে দোকানে গিয়ে দেখেন মেঝেতে তুহিনের লাশ পড়ে আছে।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, দোকানের পাশে থাকা হিরাঝিল আবাসিক হোটেলে মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করা নিয়ে তাদের সাথে পূর্ব বিরোধ ছিলো। তার জন্য তুহিনকে হত্যা করেছে তারা। হত্যা করার পর ও নিহত তুহিনের পরিবার কে ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি ও ভয় ভীতি দেখিয়ে রেখেছে।
এছাড়া গত কয়েক রাতে দোকানে থাকা অবস্থায় হিরাঝিল হোটেলে মাদকের চালান প্রবেশ করতে দেখে ফেলায় হোটেলে মালিক মোস্তফার ছেলে রনি ও আল আমিন তাকে হত্যা করেছে বলে দাবী করেন স্বজনরা। ঘটনার পর থেকে হোটেল বন্ধ করে হোটেলের মালিক মোস্তফা ও তার দুই ছেলে রনি ও আল আমিন পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পালিত পিতা নুরুল হুদা জানান, “হিরাঝিল হোটেলের মোস্তফা মিয়ার ছেলে মাদক ব্যবসায়ী আল আমিন ও রনি দীর্ঘদিন ধরে এখানে ফেন্সিডিল ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছিল। সোমবার গভীর রাতে আল আমিন ও রনি ফেন্সিডিলের কার্টুন হোটেলের পাশের রুমে নিয়ে যাওয়ার সময় তুহিন দেখে ফেলায় তাকে মারধর করে এবং মাদকের বিষয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।”
সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) তরিকুল ইসলাম জানান, “সম্ভাবনা ভোরের এক সময় কিশোর তুহিনকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের দুই গালে আঘাতের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক অবস্থায় পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা বলে মনে হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
নিহতের পিতা বলেন, “আমি সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।” সোনারগাঁও থানায় নিহত তুহিনের পরিবার লিখিত অভিযোগ করেন।