সম্পত্তির লোভে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ধর্মগঞ্জ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে (৭২) হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পিবি আই। এক সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে আবদুল হালিমকে হত্যা করেন তাঁর একমাত্র ছেলে এইচ এম মাসুদ (৪২)।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবি আই) সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সংস্থাটির নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, সম্পত্তির লোভে আবদুল হালিমকে হত্যা করে মৃত্যু নিশ্চিতে যন্ত্র দিয়ে তাঁর প্রেশার মাপা হয়। পরে হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নাটক সাজান ছেলে। কিন্তু তাঁর শেষরক্ষা হয়নি। মাসুদের সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসে। মাসুদ দেশের বাইরে পলাতক রয়েছেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে মাসুদকে নিয়ে মাওলাবাজার এলাকার বাড়িতে থাকতেন আবদুল হালিম। একই বাসায় মাসুদ তাঁর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকতেন। বাবা তাঁর সম্পত্তি বোনদের ভাগ করে দিতে পারেন-এমন সন্দেহ হয় মাসুদের। সব সম্পত্তি নিজে আত্মসাৎ করতে তিনি বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনামতো স্থানীয় অটোচালক রুবেলের সঙ্গে পাঁচ লাখ টাকায় বাবাকে হত্যার চুক্তি করেন মাসুদ। গত ৩১ জানুয়ারি রাতে রুবেলকে সঙ্গে নিয়ে বাবাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। তারপর ডাকাতির নাটক সাজান। অটোচালককে দিয়ে মাসুদ তাঁর হাত-পা বাঁধান। তিনি চিৎকার করলে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজন গিয়ে তাঁর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন।
আবদুল হালিমকে হত্যার ঘটনায় তাঁর জামাতা বাদী হয়ে মামলা করেন। পিবি আই বলছে, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা অটোচালক রুবেলকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে।
এর আগে, ১১ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ি থানা এলাকা থেকে অটোরিকশার চালক খুনি রুবেলকে গ্রেফতার করে পিবি আইয়ের একটি টিম। হত্যার আলামত হিসেবে কিলিংয়ের জন্য দেয়া নগদ ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ও সিসি ক্যামেরার ডিভিআর মেশিনটি উদ্ধার করা হয়েছ। ঘাতক রুবেল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, আবদুল হালিম নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার ধর্মগঞ্জের মাওলাবাজার এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকতেন। গত ৩১ জানুয়ারি রাতে নিজ বাড়িতে তাঁকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত করছে পিবি আই।