fbpx
২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, সকাল ৭:৪৫

সমুদ্রে ডাকাতি, না.গঞ্জে বসে মুক্তিপণ আদায়

সবারকন্ঠ
  • আপডেট : ডিসেম্বর, ১, ২০২১, ১০:০০ অপরাহ্ণ
  • ২০৪ ০৯ বার দেখা হয়েছে

সবারকন্ঠ রিপোর্ট: বরগুনা, পিরোজপুর ও পটুয়াখালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার নৌকায় ডাকাতি করতো দস্যুরা। জেলেদের অপহরণের পর নারায়ণগঞ্জ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করা হতো। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অপহরণের টাকা আদায়ের পর তা দস্যুদের মধ্যে ভাগ করে দিতেন সংগ্রাহক ইলিয়াস হোসেন মৃধা। গোয়েন্দা নজরদারির পর র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছে।

ইলিয়াস মূলত এক দস্যুনেতার নির্দেশে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বসে মুক্তিপণের সাত লাখ টাকা নিয়েছিলেন। যার একটা অংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দস্যুদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন। গ্রেপ্তারের সময় অপহরণের পাঁচ লাখ টাকা ইলিয়াসের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান এলিট ফোর্সটির মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাব জানায়, গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পিরোজপুর, পটুয়াখালী ও বরগুনা থেকে জেলেরা মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে যায়। ২০ নভেম্বর রাতে জেলেরা পাথরঘাটা, বরগুনা ও পটুয়াখালী (বলেশ্বর ও পায়রা মোহনা) বঙ্গোপসাগরের সংলগ্ন ৩০-৫০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে বেশ কয়েকজন অপহৃত হন। এসময় একটি নৌকার মূল মাঝি, কয়েকজন জেলে ও মোবাইল অপহরণ করে দস্যুরা। তারা অপহৃত জেলেদের কাছে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে এবং তাদের একটি নৌকা রেখে দেয়। যা দিয়ে ডাকাতির কাজ চালায়। তাছাড়া জেলেদের কাছ থেকে লুট করা মাছ, জাল এবং তেল ডাকাতদের নৌকার মাধ্যমে উপকূলে নিয়ে যায়।

র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, এই ঘটনার পর র‌্যাব জেলেদের উদ্ধার ও দস্যুদের আটকে কাজ শুরু করে। র‌্যাব-৮ এর আভিযানিক দল বঙ্গোপসাগরের অভ্যন্তরে ও সমুদ্রের নিকটবর্তী চরাঞ্চল যেমন- ঢালচর, সোনার চর, চর মন্তাজসহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি শুরু করে। তাছাড়া হেলিকপ্টারেও টহল দেয়। দস্যুরা র‌্যাবের গতিবিধি ও তৎপরতা আঁচ করতে পেরে ২৩ নভেম্বর অপহৃত জেলেদের নৌকায় রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। কিন্তু এসব জেলেকে ডাকাত সন্দেহে ঘিরে ফেলে হামলা চালায় স্থানীয় জেলেরা।

র‌্যাব মোবাইল ব্যাংকিং ট্রান্সফারের মাধ্যমে মুক্তিপণের অর্থের ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। র‌্যাবের গোয়েন্দারা নারায়ণগঞ্জসহ আরও কয়েকটি জায়গায় এ সংক্রান্ত ‘ফুটপ্রিন্ট’ শনাক্ত করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গত রাতে বঙ্গোপসাগরের সমুদ্রসীমায় জেলেদের নৌকায় ডাকাতির মূল মুক্তিপণ সংগ্রাহক ইলিয়াস হোসেন মৃধাকে মুক্তিপণের টাকাসহ গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় মুক্তিপণের পাঁচ লক্ষাধিক টাকা।

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইলিয়াস জানিয়েছেন, তিনি সংঘবদ্ধ জলদস্যু দলের সদস্য। ইলিয়াস দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জে বসবাস করলেও তার বাড়ি পটুয়াখালীতে। এই দস্যু দলে ১৫-১৭ জন সদস্য রয়েছে। দলের সদস্যরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে মূলত ডাকাতির কাজ করে। আর মুক্তিপণ সংগ্রহে ২/৩ জন কাজ করে। ইলিয়াসের দায়িত্ব ছিল অপহরণদের মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহ ও বণ্টন করা। ডাকাত সর্দারের অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় তাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর মুক্তিপণের টাকা পেতে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের কাছে ভুয়া মোবাইল নম্বর দিতেন। আবার অনেক সময় ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি করতেন। প্রতিটি ডাকাতির পর ইলিয়াস ও তার সহযোগীরা ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করতেন এবং মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতেন। তারপর কাজ শেষে ওই এলাকা ত্যাগ করতেন।

দিনে লুকিয়ে থেকে রাতে ডাকাতি

র‌্যাব জানিয়েছে, সমুদ্রসীমানার যেসব এলাকায় মাছ ধরতে জেলেদের আনাগোনা আছে সেসব এলাকার উপকূলে দস্যুরা অবস্থান নেয়। দিনে তারা ছদ্মবেশে বা আত্মগোপনে থাকলেও রাতে তারা সমুদ্রে গিয়ে জেলেদের নৌকায় ডাকাতি করে। মাছ ধরার মৌসুম বাদে অন্য সময় তারা গার্মেন্টসকর্মী, নির্মাণ শ্রমিক, রাজমিস্ত্রী, সেমাই ও মিষ্টি তৈরির কারখানা ও ইটের ভাটার কাজ করে। অনেক সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক বিয়ে করে ছদ্মবেশে জীবনযাপন করছে।

র‌্যাব বলছে, জেলেদের নৌকায় লুট করা মাছ, জাল, নৌকা, তেলসহ অন্যান্য জিনিস অল্প দামে বিক্রি করত। এগুলো কারা কিনছে তাদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে

সংবাদটি শেয়ার করে সবাই কে দেখার সুযোগ করে দিন

এ বিভাগের আরো খবর
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত  © ২০২১ সবার কন্ঠ
Design & Developed BY:Host cell BD
ThemesCell