ফেব্রুয়ারী ১০, ২০২৫, ৪:১৩ পূর্বাহ্ন
Shahalam Molla
  • আপডেট : মার্চ, ৩০, ২০২৪, ৯:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ১৩৪০৭০ ১৯ বার দেখেছে

অযৌক্তিক ৬ দফা দাবী ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে

মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ এর উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে

সবারকন্ঠ রিপোর্ট
  • আপডেট : মে, ২৯, ২০২২, ১০:১৮ অপরাহ্ণ
  • ১৮১ ১৯ বার দেখেছে
মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ এর উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে

দেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প পণ্য রপ্তানীতে আয় নির্ভর অর্থনীতিকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের বিশেষায়িত লবণ খাত দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনে একটি সমৃদ্ধ ইউনিট প্রবর্তনে বাংলাদেশ বিশ্বে অনেকটাই এগিয়ে। শুধু লবণ শিল্পই নয়, এ শিল্পের পাশাপশি সব ধরনের রপ্তানীমুখী শিল্প আজ দেশের অগ্রযাত্রায় বলিষ্ঠ ভ‚মিকা রাখলেও শুধুমাত্র বে-আইনি এবং অযৌক্তিক শ্রমিক অসন্তোষ এবং বিক্ষোভের কারণে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একটি কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনের ক্রমন্বয়ে তা দেশের বিভিন্ন জেলার কারখানাগুলোতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, অনেক সময় কারাখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়, যা পণ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দেশের মহাসড়কগুলোতেও যানজটের অন্যতম কারণ শ্রমিক বিক্ষোভ। ফলশ্রæতিতে আজ দেশের অন্যান্য শিল্পের ন্যায় লবণ শিল্পেও হাতছানি দিচ্ছে এক অশনি সংকেত। কয়েকদিন ধরে দেশের অন্যতম স্বনামধন্য আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ,নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা দাপায় অবস্থিত লবণ উৎপাদন কারখানায় অযৌক্তিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে কিছু সংখ্যক দিন মজুর কারখানার অভ্যন্তরে ও বাইরে মজুরী বৃদ্ধি ও ৬ দফা দাবী আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি করছে। তারা দফায় দফায় কারখানার সম্মুখভাগে বিক্ষোভ, মিছিল, অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে। অথচ যারা এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে তারা বস্তুত একজন ঠিকাদার (সর্দার) এর মাধ্যমে দিন মজুর হিসেবে কারাখানার আমদানী, রপ্তানী, আয়োডিনযুক্তকরণ,খামালী ও পাল্টানী, ফেনার ওয়াশ এবং প্যাকেটকরণে কাজ করে থাকেন এবং মজুরী প্রাপ্ত হন। তাদের সাথে প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিকের কোন সম্পর্ক নাই। তথাপিও তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে প্রায়শই বিভিন্ন দাবী দাওয়া উত্থাপন করে প্রতিষ্ঠানের নিকট এবং বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, চাষাঢ়া কার্যালয়ে লিখিতভাবে তাদের ৬ দফা দাবীর কথা জানালে শ্রম দপ্তর মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা দাপার ঠিকানায় চিঠি প্রেরণ করলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে বিগত ১২ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখে লিখিত জবাবে জানানো হয় যে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ২০৯ তৎসহিত ২১০(১) এর বিধান মোতাবেক কোন প্রতিষ্ঠানের যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) ব্যতীত কোন শিল্প বিরোধ উত্থাপন করার সুযোগ নেই। “মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ” এর অভ্যন্তরে এ প্রতিষ্ঠানের সম্পকির্ত কোন রেজিস্টার্ড ট্রেড ইউনিয়ন বা যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নেই। যেহেতু নারায়ণগঞ্জ জেলা লবণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাথে মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ এর কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং উক্ত ইউনিয়নের সদস্যদের সাথে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক-শ্রমিক কোন সম্পর্ক নেই বিধায় বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ২১০(১) এর বিধান মোতাবেক কোন ও শিল্প বিরোধের কোন সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণেই বর্ণিত ইউনিয়ন কর্তৃক উত্থাপিত ৬দফা দাবীর বিষয়টি বিবেচনার কোন সুযোগ মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ এর নেই।

নারায়ণগঞ্জ জেলা লবণ শ্রমিক ইউনিয়ন কর্তৃক উত্থাপিত ৬ দফার দাবীনামা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন কারণ প্রথম দফায় উল্লিখিত আমদানী, রপ্তানী, আয়োডিনযুক্তকরণ, খামালী ও পাল্টানী, ফেনার ওয়াশ এবং প্যাকেটকরণে কাজের দর বৃদ্ধি করার দাবী। তারা কখনোই মোল্লা সল্ট এর শ্রমিক নয়, ঠিকারদারের (সর্দার) মাধ্যমে নিযুক্ত কতিপয় কর্মী মোল্লা সল্ট এ মাঝে মাঝে দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে (হড় ড়িৎশ হড় ঢ়ধু) কাজ করে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার (সর্দার) এর সাথে লিখিত যুক্তির মাধ্যমে উক্তরুপ কাজের দর নির্ধারণ করা হয় এবং সে ঠিকাদারের মাধ্যমে তাদের মজুরী প্রদান করা হয় বিধায় দাবী মোতাবেক দাম বৃদ্ধি করার কোন প্রকার আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় নিয়োগ পত্র,পরিচয় পত্র, সার্ভিস বহি ও হাজিরা কার্ড প্রদান ও ইদ বোনাস দাবী প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৩ক(৩) এর ধারা মোতাবেক ঠিকাদার সংস্থা বা ঠিকাদার(সর্দার) কর্তৃক সরবরাহকৃত শ্রমিকগণ সংশ্লিষ্ট  ঠিকাদারের শ্রমিক বলে গণ্য হবে। সুতরাং ঠিকাদার (সর্দার) কর্তৃক নিযুক্ত কর্মীগণের নিয়োগ পত্র,পরিচয় পত্র, সার্ভিস বহি ও হাজিরা কার্ড ও ইদ বোনাস প্রদান করা উক্ত ঠিকাদার (সর্দার) এর আইনগত দায়বদ্ধতা। মোল্লা সল্ট এর সাথে এ ধরনের কর্মীদের সাথে মালিক-শ্রমিক কোন প্রকার সম্পর্ক নেই বিধায় দাবী বিবেচনার কোন প্রকার সুযোগ নেই। চতুর্থ দফা অনুয়ায়ী প্যাকেজিং কাজে ময়লা বাছা ও পরিস্কার বাবদ হাজিরা দিতে হবে, প্রতিটি কাজের দর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার (সর্দার) এর সাথে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত সেহেতু অতিরিক্তি ভাতা বা পারিতোষিক বা কোন সুযোগ সুবিধা প্রদানের কোন সুযোগ নেই। পঞ্চম দফায় ফেনার ওয়াশ শ্রমিকদের মেস/বাসা দেয়ার দাবী, যেহেতু তারা ঠিকাদারের নিযুক্ত শ্রমিক এবং অত্র প্রতিষ্ঠানের দিন মজুর এবং মালিক শ্রমিক কোন প্রকার সম্পর্ক নেই এবং মোল্লা সল্ট এ মেস/বাসা দেয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রকার আইগত বাধ্যবাধকতা নেই। ৬ষ্ঠ দফা মোতাবেক সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫টার পর অতিরিক্ত কাজের জন্য মজুরী দিতে হবে। কাজের দর যেহেতু ঠিকাদার (সর্দার) এর সাথে লিখিত চুক্তি অনুযায়ী প্রদান করে থাকে প্রতিষ্ঠান, সেহেতু কর্মী/শ্রমিকদের দিয়ে ৫ টার পর অতিরিক্ত কাজ এর অতিরিক্ত মজুরী সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দিতে আইনগত বাধ্য থাকিবে।

 মোল্লা সল্ট ইন্ডস্ট্রিজ প্রতি দুই বছর অন্তর অন্তর নির্ধারিত ঠিকাদার (সর্দার) এর সাথে কর্মী/শ্রমিকদের কাজের দর নির্ধারণ করে একটি চুক্তি করেন এবং সে অনুযায়ী দুই বছর সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার (সর্দার) এর অধীন শ্রমিকরা কাজ করে এবং ঠিকাদারের মাধ্যমে তারা মজুরি প্রাপ্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিগত ০১ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত দুই বছরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মী/শ্রমিকদের কাজের দর নির্ধারণ করে প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ঠিকাদার জনাব হোসেন সরদারের ছেলে জনাব মোঃ আবুল কাশেম এর সাথে প্রতিষ্ঠানের এ.জি.এম (এইচ আর এন্ড এডমিন) মোঃ আলমগীর কবীর ও ম্যানেজার সমর কুমার বিগত ২৩ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখে লিখিত চুক্তি স্বাক্ষর করেন। সে চুক্তি অনুযায়ী যথারীতি কারখানার উৎপাদন চলছিল। বিগত ৬/৭ দিন যাবৎ  কারখানার শ্রমিকদের মাঝে কাজের দর লিখিত চুক্তির মাধ্যমে নির্ধারণ করা সত্তে¡ও পুনরায় অসন্তোষ সৃষ্টি করা হচ্ছে।

যারা বিভিন্ন সময় দেশের পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত করতে এবং দেশের অর্থনীতির চাকাকে অচল করতে শ্রমিকদের উসকানী ও মদদ দিয়ে কারাখানার পরিবেশকে অশান্ত করে তোলে, তেমনি কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বা কুচক্রি মহলের দুর্বৃত্তায়ন ও মদদে সাধারণ শ্রমিকগণ মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ এর দাপা অঞ্চলের কারাখানার উৎপাদন বন্ধ করে অযৌক্তিক বিক্ষোভ মিছিল এবং বে-আইনি অবস্থান ধর্মঘট পালনের মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, তেমনি সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার পাঁয়তারা করছে এবং সরকারের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। পাশাপশি মোল্লা সল্টের ন্যায় একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য লবণের ঘাটতি বাজারে ফেলে ভোক্তাদের বিশ^াসযোগ্যতা নষ্ট করে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। এক দিকে দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে জনজীবনে যেখানে নাভিশ্বাস সেখানে উৎপাদন ব্যাহত করে বাজারে লবণের ঘাটতি সৃষ্টি করে মজুদকৃত লবণের দাম অধিক হারে নেয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত উল্লিখিত কুচক্রি মহলটি। এ কুচক্রি মহলটি শ্রমিক বিক্ষোভের সচিত্র সংবাদ স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ করে জনজীবনে ভীতি সঞ্চার করে বাজারে মোল্লা সল্টের লবণ এর ঘাটতিকে স্পষ্ট করতে চায় এবং মোল্লা সল্টকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এমতাবস্থায় জেলা প্র্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি শিল্প মন্ত্রণালয়সহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এই ধরনের বে-আইনি এবং অযৌক্তিক শ্রমিক অসন্তোষ দূর করে পুনরায় মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ এর উৎপাদন ধারা গতিশীল করলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোল্লা সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ আরো বেশী অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন লবণ ব্যবসায়ে সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানের উর্ধŸতন কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করে সবাই কে দেখার সুযোগ করে দিন
      
 
   

এ খবরটি আপনার বন্ধুকে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2020 sabarkantho
Design & Developed BY:Host cell BD
asterpress