এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ৫:২৯ পূর্বাহ্ন
Shahalam Molla
  • আপডেট : মার্চ, ৩০, ২০২৪, ৯:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ১৯৮৯৮৩ ১৯ বার দেখেছে

‘মানুষের কাছে পয়সা নেই, আছে হাহাকার’

নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট : নভেম্বর, ৭, ২০২৩, ৯:৪৮ অপরাহ্ণ
  • ৩৫৬ ১৯ বার দেখেছে
‘মানুষের কাছে পয়সা নেই, আছে হাহাকার’

‘মানুষ দিশেহারা হয়ে গেছে।  কেউই শান্তিতে নেই।  গত ২০-২৫ দিন ধরে কোনো কাজ নেই। কারও বাসায় কাজ করতে গেলে বলে টাকা-পয়সা নেই। বর্তমানে কাজের বাজার একেবারেই ভালো না।  দিন যায় কিন্তু কাজ পাই না।’

 

এভাবেই আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন স্বপন মণ্ডল। তিনি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি।  নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকায় ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। পরিবারের আয়ের উৎস তিনিই।

 

স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘বিগত ৩০ বছর ধরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করে আসছি। কাঠের সব কাজই আমরা করে থাকি। তবে আমরা দিন আনি দিন খাই। মানে আমরা দিনমজুর হিসেবে কাজ করি।’

 

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি খুবই খারাপ। ভয়াবহ অবস্থা।  কাজের বাজার ভালো না।  জিনিসপত্রের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। এককেজি আলু কিনতে গেলেও লাগে ৫০ টাকা। মানুষের কাছে পয়সা নেই।  আছে হাহাকার।’

 

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ শহরের দিগুবাবুর বাজার এলাকার কাছাকাছি বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে প্রতিদিন সকালে ৫০-৬০ জন বসে থাকেন কাজের জন্য।  যাদের কাঠ সংশ্লিষ্ট কোনো কাজের প্রয়োজন হয় তারা এখান থেকে লোক নিয়ে যান।  সারাদিন কাজ শেষে সন্ধ্যার আগে টাকা দিয়ে বিদায় করে দেন।  এভাবে দিনপ্রতি ৮০০-৯০০ টাকায় কাজ করে থেকেন তারা।

 

সকালে তাদের সংখ্যা ৫০-৬০ জন থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তাদের সংখ্যা কমতে থাকে।  কাঠের কাজের ডাক পেলে অনেকে চলে যান।  আবার অনেকে কাঠের কাজ না পেলে অন্য কোনো কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েন।  তবে যাদের অন্য কোনো উপায় না থাকে তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তই এখানে বসে কাজের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।

 

স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে ৫০-৬০ জন এলেও কাজ পান ১০-১২ জন।  বাকিরা কাজ ছাড়াই চলে যান। মানুষের কাজকর্ম নেই।  কোনোসময় কাজ পেলেও দামে মেলে না।  মানুষের শুধু অভাব আর অভাব।’

 

বন্দরের রূপালী এলাকার বাসিন্দা মো. খোকন বলেন, ‘আমরা কাঠমিস্ত্রির কাজ করি।  মালিকরা এখান থেকে আমাদের রোজে (দিন হিসেবে) নিয়ে যায়। ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা রোজ।  সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যার সময় টাকা নিয়ে চলে আসি।  কাজ না পেলে সন্ধ্যা পর্যন্তই এখানে বসে থাকি।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘২০-২৫ বছর ধরে কাঠমিস্ত্রির কাজ করি। আগে কাজ হতো।  এখন কোনো কাজই হয় না।  আগে মাসে ২৫-২৬ হাজার টাকা আয় করতে পারতাম।  এখন ১০ হাজার টাকাও আয় করতে পারি না।’

 

গাইবান্ধা থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে কাজের সন্ধানে এসেছেন শামসুল হক।  শহরের জিমখানা বস্তিতে একাই ভাড়া থাকেন। সেখান থেকে এখানে প্রতিদিন কাজের সন্ধানে আসেন।

 

শামসুল হক বলেন, ‘পেটের দায়ে কাজ করি। সপ্তাহে দুদিন কাজ হয়।  বাকি দিন কোনো কাজ পাই না।  একা মানুষ, কাজ না থাকলে না খেয়ে থাকি। আগে মাসে ২০ হাজার টাকাও আয় করেছি। এখন পাঁচ হাজারও হয় না।’

 

নারায়ণগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান সরদার বলেন, যারা দিনমজুর তাদের জন্য আমাদের ওইরকম কিছু করার নেই। তবে বয়স ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে হলে সেক্ষেত্রে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।  এটা ছাড়া অন্য কিছু করার মতো কিংবা স্পেশালি কিছু করার মতো কোনো প্রকল্প আমাদের নেই।

 

 

সূত্র:  জাগো নিউজক

 

 

সংবাদটি শেয়ার করে সবাই কে দেখার সুযোগ করে দিন
      
 
   

এ খবরটি আপনার বন্ধুকে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2020 sabarkantho
Design & Developed BY:Host cell BD
asterpress