প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি। পদ্মা সেতু নির্মাণের সব কৃতিত্ব বাংলাদেশের জনগণের।
রোববার (৩ জুন) গণভবন থেকে বার্ষিক কর্মসম্পাদন (এপিএ) চুক্তি সই ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান-২০২২ এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সহকর্মী এবং কর্মকর্তাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শুভেচ্ছা আমার দেশের জনগণের জন্য, আমার জন্য নয়।
‘এই প্রমত্তা পদ্মার বুকে সেতু তৈরি করাটাই একটি ইতিহাস। সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী ও সচিব যারা ছিলেন, অর্থ বরাদ্দে তারা এতটুকু কার্পণ্য করেননি। বরং কীভাবে আমরা নিজেদের টাকায় সেতু করতে পারি সে জিনিসটি আরও সহজ করে দিয়েছেন।’
অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কেবিনেট ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১২ সাল থেকেই তো এই যুদ্ধ শুরু। এর জন্য কত অপবাদ, ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হয়েছে। আর সবচেয়ে দুঃখজনক যে, আরও আগে সেতুর কাজ শুরু করা গেলে আরও আগেই শেষ করা সম্ভব হতো।
তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় আমার কাছে অবাক লাগে, আমাদের কিছু অর্থনীতিবিদ ও জ্ঞানী-গুণীরা যে বলেছিলো, এটা ভায়াবল (টেকসই) হবে না। কে এখান দিয়ে চলবে, কোনো টাকা উঠবে না। কিন্তু এখন কি দেখা যাচ্ছে?
পদ্মা সেতুর ফলে মানুষের জীবন-জীবিকার আমূল পরিবর্তন ঘটবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু তৈরির আগে প্রতি বছরই উত্তরবঙ্গে মঙ্গা (বাত্সরিক দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অবস্থা) দেখা দিতো। অথচ এই একটি সেতু নির্মাণের পর সেখানের মঙ্গা আর নেই।
‘সেখানে পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি সাপ্লাই চেইন স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ইলিশের মৌসুম এসে যাওয়ায় রাজধানীতে বসেই তাজা ইলিশ প্রাপ্তিও সম্ভব হবে। অন্যদিকে জেলেরাও লাভবান হবে। পদ্মা সেতু আমাদের দেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের একটা বিরাট মাইলফলক।’
সেতু নির্মাণের শুরুতে বিশ্ব ব্যাংকের মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য ছিল না। এরপরই আমরা ঘোষণা দিলাম, নিজের টাকাতেই পদ্মা সেতু করবো, অন্যের টাকা নেবো না।