আমাদের দৈনন্দিন খাবারে যার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, তার নাম ডিম ।ডিম নিয়ে বললে বাড়াবাড়ি হবে না। ডিম এমন একটা খাবার, যাকে নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই বললেই চলে। তবে ‘ডিম আগে না মুরগি আগে , বিতর্ক করবো না । তবে আপাতত জেনে নেওয়া যাক কেন খাবেন ডিম।
আমরা ডিমের প্রাথমিক কিছু গুণগান না করে পারিনা । ডিম প্রথম শ্রেণির প্রোটিনের অন্যতম সেরা উদাহরণ। তা ছাড়া ডিমে আছে ভিটামিন এ, ডি, বি, বি-৬, বি-১২, জিংক, কপার, আয়রন । এ ছাড়াও আছে লুটেইন ও জিয়াস্যানথিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। শেষের দুটো উপাদান বৃদ্ধ বয়সেও চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। আলট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়ায়। আমরা প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে তা হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। ডিম স্কিন আর চুলও ভালো রাখে।ডিমে ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড আছে। এগুলো মস্তিষ্কে সেরাটোনিন নামক বিশেষ একধরনের হরমোন ক্ষরণ করতে উৎসাহিত করে। এই হরমোনটি একটি রিল্যাক্সিন হরমোন। এটি দুশ্চিন্তা কমিয়ে মন ভালো করে দিতে পারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিমের উপযোগিতাও বেড়ে যায়। তাই এক বছর বয়স থেকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রতিদিন আপনাকে একটি করে ডিম খেতে হবে।
কোলেস্টেরলের জন্য ডিমের বদনাম আছে। কিন্তু একটা ডিমে এক চা-চামচের মতো চর্বি থাকে। কিন্তু সেটা অন্যান্য স্যাচুরেটেড চর্বির মতো অতটা ক্ষতিকর নয়। তা ছাড়া সারা দিনে মানুষের শরীরে ৩০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরলের প্রয়োজন হয়। আর একটা ডিমের কুসুমে থাকে ২০০ মিলিগ্রাম। এত দিন বলা হতো যে ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এই ধারণা আসলে সত্যি নয়।
অনেকেই আবার কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করেন। অনেকে কাঁচা ডিমে বেশি পুষ্টি মনে করে খান। এটিও সত্যি নয়। এভাবে ডিম খেলে সালমোনেলা-জাতীয় ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ডিম বেশি তেলে ভাজি বা ভুনা করে না খেয়ে সেদ্ধ করে বা পানিতে পোচ করে খেলে বেশি ভালো। এতে স্নেহজাতীয় পদার্থের পরিমাণ বাড়বে না। ডিমের প্রায় পুরো পুষ্টিটাই পাবেন।