ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের বড়হিত ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে ৫৫ বছরের এক বৃদ্ধার সাথে ২৫ বছরের এক যুবকের জোর করে বিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দূর সম্পর্কে ওই বৃদ্ধা যুবকের দাদী হয়।
পাঁচ বছর আগে স্বামী হারিয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের নওপাড়া গ্রামের ৫৫ বছরের এক বৃদ্ধা। এরপর থেকে আলাদা ঘরে একাই বসবাস করে আসছিলেন তিনি। বাড়িটিতে আসা- যাওয়া ছিল প্রতিবেশী ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের। দূর সম্পর্কে তারা দাদি-নাতি।
যদিও এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না কেউই। ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, এলাকার ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলামসহ স্থানীয় ব্যক্তিরা সালিশের মাধ্যমে জোর করে এই বিয়ে দেন। ওই নারীও এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরিবারের লোকজন মাফ চেয়েও পার পাননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য খাইরুল মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সালিশি সিদ্ধান্তেই ২৫ বছরের ওই যুবকের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছে ৫৫ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে। সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে এই বিয়ের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার দুপুরে দাদি-নাতির বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়হিত ইউনিয়নের বিয়ের রেজিস্ট্রি কাজে নিয়োজিত কাজী মোহাম্মদ নুরুল্লাহ। তিনি বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় নওপাড়া গ্রামে বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। বিয়েতে পাঁচ লাখ টাকার দেনমোহর ধার্য করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসান দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাতে নিজ ঘরে প্রতিবেশী নাতির সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরা পড়েন দাদি। পরদিন শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুরুব্বিরা সালিশে বসে নাতির সঙ্গে দাদির বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন। বিয়ের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই নাতি পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা দাদিকে নাতির বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন। একদিন পালিয়ে থাকার পর রোববার নাতি বাড়ি ফিরেন। পরে ওইদিন আবারও স্থানীয়রা সালিশে বসে সোমবার বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। তারপর তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
তবে বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ জালাল জানান, অসুস্থতার কারণে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। দাদি-নাতির বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না। পরবর্তীতে তিনি শুনেছেন।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, অনৈতিক সম্পর্কের কারণে ধরা পড়ে এক বৃদ্ধা ও নাতির বয়সী যুবকের বিয়ের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে তাদের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল কিনা তদন্ত করে সত্যতা নিশ্চিত করা হয়নি। যদি জোর করে বিয়ে দেয়া হয় তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে থানায় এখনও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।