গাজায় যুদ্ধ না থামা পর্যন্ত ইসরায়েলকে স্বীকৃতি ও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে কোনো কথা বলবে না সৌদি আরব। বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভায় এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত রাজকুমারী রীমা বিনতে বান্দর আল-সৌদ।
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণকে সৌদি আরবের নীতির কেন্দ্রস্থলে রাখা হয়নি। সৌদি নীতির কেন্দ্রে রাখা হয়েছে শান্তি ও সমৃদ্ধিকে।
রাজকুমারী রীমা বলেন, সৌদি আরব এ বিষয়ে যথেষ্ট স্পষ্ট। যতদিন পর্যন্ত (ফিলিস্তিনে) সহিংসতা চলছে, হত্যাকাণ্ড অব্যাহত থাকছে, আমরা পরের দিন সম্পর্কে কথা বলতে পারি না।
ইসলাম ধর্মের পবিত্রতম ভূমি মক্কা-মদিনার দেশ সৌদি আরব আজ পর্যন্ত ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ২০২০ সালে আব্রাহাম অ্যাকর্ডে সই করে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্থাপন করেছিল উপসাগরীয় প্রতিবেশী বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ওই চুক্তিতে সই করতে রাজি হয়নি সৌদি আরব।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনও রিয়াদকে রাজি করাতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের শাসনাধীন সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। এর মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা গ্যরান্টি এবং বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তার দাবি।
গত সেপ্টেম্বরে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ সালমান বলেছিলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ‘আমরা প্রতিদিন একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি’। যদিও স্বাধীন ফিলিস্তিন ইস্যু রিয়াদের কাছে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
তবে গত ৭ আগস্ট ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর বদলে যায় পরিস্থিতি। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১ হাজার ১৪০ জন প্রাণ হারান।
এর প্রতিশোধ নিতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরোচিত আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এরই মধ্যে ২২ হাজার ৬০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের ৭০ শতাংশই নারী, শিশু ও নবজাতক।
ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে এই যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহ পরেই সৌদি আরব জানিয়ে দেয়, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের আলোচনা স্থগিত করেছে।
সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি