অতিপ্রাচীন কাল থেকেই খেজুর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফল্। খেজুরে রয়েছে অনেক উপকারিতা। ইসলামে আছে যে, খেজুর খাওয়া সুন্নত। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। খেজুর অত্যন্ত সুস্থাদু ও রুচিশীল একটি ফল। খেজুর হচ্ছে শক্তির অন্যতম একটি ভালো উৎস। ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে এক গ্রাম প্রোটিন, ২.৮ গ্রাম ফাইবার, ৯০ ক্যালোরি, ১৩ মি.লি. গ্রাম ক্যালসিয়াম এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
খেজুরে রয়েছে প্রচুর এমিনো অ্যাসিড, প্রচুর শক্তি, শর্করা, ভিটামিন ও মিনারেল। আর এ উপাদানগুলোর কারণে সারা দিন রোজা শেষে ইফতারে এটি ক্লান্তি দূর করে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের জোগান দেয়। তাই রোজার সময় এটি খাওয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। খেজুরে উপকারিতা সবসময়ই পেতে এটি সারাবছরই খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
এ ছাড়া সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে মিলবে অনেক উপকার। ড্রাই খেজুরকে সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি খালি পেটে খেলে দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা। এ ছাড়া পাকা খেজুর নরম ও মাংসল হওয়ায় এটি সহজেই হজম হয়ে যায়।
পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রনের অনেকটাই খেজুর থেকে আসে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস থাকলে প্রচলিত খেজুরের বদলে শুকনো খেজুরকে ডায়েটে রাখতে বলেন বিশেষজ্ঞরা।
জেনে নিন খেজুরের উপকারিতা-
১। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই এটি পেশি গঠন করে এবং শরীরের জন্য অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করতে সহায়তা করে।
২। খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন। শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন (বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫) ছাড়াও ভিটামিন সির ভালো উৎস এটি। আর এটি দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও কার্যকরী।
৩। খেজুরে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়া। খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। খেজুর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে কারণ প্রতিটি খেজুরে রয়েছে ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম
৫। খেজুর হাড়কে মজবুত করে এবং শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে কারণ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম।
৬. গবেষণায় দেখা যায়, খেজুর পেটের ক্যানসার প্রতিরোধ সহায়ক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত খেজুর খেলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমে অনেকটাই। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সময় ওষুধের চেয়েও ভালো কাজ করে থাকে।
৭। রুচি বাড়াতে অনেক কার্যকরী হচ্ছে খেজুর। শিশুদের খাবারে অরুচি থাকলে তাদের নিয়মিত খেজুর খাওয়াতে পারেন। এতে তাদের খাবারের রুচি ফিরে আসবে।
৮। খেজুরে কোলেস্টেরল ও বাড়তি চর্বি না থাকার কারণে অন্যান্য ক্ষতিকর ও চর্বিজাতীয় খাবারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
৯। হৃৎপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে খেজুর। যাদের হৃৎপিন্ডের সমস্যা হয়, তাদের জন্য খেজুর অনেক ভালো ওষুধ হিসেবে কাজ করতে পারে কারণ খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রন প্রয়োজন, তার প্রায় ১১ ভাগ পূরণ করে খেজুর। রক্তস্বল্পতায় ভোগা রোগীরা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন।
১০। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় রাতে পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। পর দিন সকালে খেজুর ভেজানো পানি পান করুন। দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্য।