নাসিক ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ‘করোনা হিরো’খ্যাত কাউন্সিলর ও যুবদল নেতা মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা হয়েছে।
বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে এক নারী সাঈদা আক্তার (৪৪) বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যাল আদালতে এ মামলা করেন।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইবুন্যালের জেলা জজ নাজমুল হাসান শ্যামল মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত ও ভুক্তভোগীর অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই ভুক্তভোগী নারী সাঈদা আক্তার বাংলাদেশের একটি বৃহত্তর ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য। ২০২০ সালের ২ আগস্ট পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের এসএস ফিলিং স্টেশনে ওই নারীকে কাজী দিয়ে বিয়ে করেন কাউন্সিলর খোরশেদ। পরে বিভিন্ন অজুহাতে বিভিন্ন সময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থও নিতে থাকেন। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার এক পর্যায় বিষয়টি বাইরে জানাজানি হলে ভুক্তভোগীর (সাঈদা আক্তার) সাথে খোরশেদের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
পরবর্তীতে গত ২৪ এপ্রিল ফেসবুক লাইভে এসে ভুক্তভোগী নারীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আনেন কাউন্সিলর খোরশেদ। এরপর ১৬ মে ওই নারী তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে আপত্তিকর, বানোয়াট ও মিথ্যা কাহিনী সাজিয়ে কুৎসা রটানোর অভিযোগ করে কাউন্সিলর খোরশেদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন।
এদিকে ২৫ আগস্ট বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে আরও একটি মামলা করেছেন ওই নারী সাঈদা আক্তার । ওই নারীর অভিযোগ, “কাবিননামা ছাড়া তার সাথে আমার যে সম্পর্ক ছিল এর সকল প্রমাণ আমার কাছে আছে। এমনকি আমরা বেশ কয়েকমাস স্বামী-স্ত্রী হিসেবেও ছিলাম। এর সুবাদে আমার কাছ থেকে সে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা নিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিয়ের ঘটনাটি জানাজানি হলে সে আমাকে স্ত্রী হিসেবেও মানছে না উল্টো আমাকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করছে। আমি এর বিচার চাই।”
সাঈদা আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়েছে। আদালত আবেদন আমলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ পিবিআইকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় নাম উল্লেখ করে একমাত্র আসামি করা হয়েছে কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে।
এ বিষয়ে মামলার আসামি কাউন্সিলর খোরশেদ বলেন, ‘আমার সামাজিক মর্যাদা রয়েছে, আমার স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। সেই মর্যাদা নষ্ট করতে এবং আগামী সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করে তারা উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়।’ এসব যড়যন্ত্র কোনো কাজে আসবে না বলে জানান তিনি।