বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর আলী আহম্মদ চুনকা পাঠাগার মিলনায়তন প্রাঙ্গণে ত্বকী হত্যার বিচার দাবিতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম নারায়ণগঞ্জের ৪ আসনের এমপি এ কে এম শামীম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছে একটি পরিবার। মাঝে মধ্যে আস্ফালন দেন শামীম ওসমান। আপনি ঘুঘু দেখেছেন কিন্তু ঘুঘুর ফাঁদ দেখেননি।
তিনি শামীম ওসমানকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, আপনি (শামীম ওসমান) ওইদিন রাইফেল ক্লাবে বলেছেন, আপনি হুকুম দিলে শুধু মাথা দেখা যাবে মাটি আর দেখা যাবে না। আসেন না বাপের বেটা হলে হুকুম দেন! পরে থাক আমাদের মাথা আর সরকার সরকারের কাজ করুক। হুমকি আমাদেরকে দিবেন না। আপনার হুমকি, আপনার ধমক এবং আপনার ক্ষমতা জেনেই কিন্তু আমরা রাজপথে নেমেছি।
আমরা বলেছি ত্বকী হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। আপনি আপনার ভাই সেলিম ওসমান, আপনার চন্দন, খোকন যে সব নেতারা আছে এবং খোদ এই মামলার আসামি আজমেরী ওসমানকে নিয়ে আসেন।
এ সময় সাংসদ শামীম ওসমানকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আস্ফালান করবেন না। আপনার বহু আস্ফালন দেখেছি। আপনার আস্ফালন দেখতে দেখতে বহু দিন কেটে গেছে। ফতুল্লাবাসীকে ডুবিয়ে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে কথা বলেন। এত কথা যে বলেন, বলার আগে বুঝেন না কি কথা বলছেন। মিথ্যা কথা বলার একটা সীমানা থাকা দরকার। আপনি একটা চরম মিথ্যাবাদী। আপনি শুধু বানিয়ে বানিয়ে কথা বলেন। আপনি মৃত্যুর কথা বলেন কিন্তু আপনার মৃত্যুর ভয় নাই।
মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, ‘আপনি তো জনপ্রতিনিধি। তাহলে আপনি ত্বকী হত্যার বিচার চান না কেন? আজকে কেন চঞ্চলের মা কেঁদে বেড়ায়? আজকে ভুলু সাহার পরিবার কেন বিচার পায় নাই? আর মিঠু তো আপনার দলের লোক যাকে ওপেন রাজপথে হত্যা করা হলো। সেই মিঠুর বিচার চান না কেন? শুধু নিজের বেলাতেই ষোলো আনা। আপনার দিন শেষ হয়ে গেছে শামীম ওসমান।
মানুষ আপনার ভেল্কিবাজি ধরে ফেলেছে। ওইসব আজেবাজে কথা বলে কোনো লাভ হবে না। প্রধানমন্ত্রী আপনার পক্ষে থাকতে পারে কিন্তু এমন সময় আসবে যে সাধারণ মানুষ আপনার পক্ষে আর থাকবে না। আমি আপনাকে আবারও ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, আর একবারও বলবেন না যে আপনি হুকুম দিলে সব তছনছ হয়ে যাবে। তছনছ করার ক্ষমতা আপনার নাই।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে লজ্জা লাগে! আইন তার নিজস্ব গতিতে চলতে পারছে না কেন? কোন জায়গায় আইনকে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে ! আজকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া আসামি বাইরে থাকে কি করে! আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলে তাহলে সে আইনের আওতায় যাবে, সে রিমান্ডে আসবে, সে রিমান্ডে কথা বলবে।
তারপর সে যদি দোষী হয় তাহলে সাঁজা পাবে আর নির্দোষ হলে খালাস পাবে। কিন্তু আজকে বাংলাদেশের এক নিয়ম আর নারাণগঞ্জের আরেক নিয়ম।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিহত ত্বকীর বাবা ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি, খেলাঘরের জেলা সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, প্রদীপ ঘোষ বাবু, সহসভাপতি মুহাম্মদ সেলিম, বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, ন্যাপ জেলা সম্পাদক আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা প্রমুখ।