প্রায় সাড়ে তিন বছর পর হঠাৎ করে বড় পরিসরে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সম্পাদকীয় পদের নেতাদের নিয়ে তিন দিনে এক মতবিনিময় সভা করতে যাচ্ছে বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এই সাংগঠনিক সভা আন্দোলনের কৌশল ঠিক করতে, নাকি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে, তা নিয়ে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে।
বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আপাতত নির্বাচন নয়, একটি বৃহত্তর আন্দোলনের চিন্তা থেকেই সাংগঠনিক সভা আহ্বান করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ থেকে শুরু হওয়া তিন দিনের এ সভায় দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পৌনে চার শ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সভায় মাঠপর্যায়ের নেতাদের মনোভাব জানার চেষ্টা করবেন দলের নীতিনির্ধারকেরা। আমন্ত্রিত নেতাদের সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও সভায় উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকার বাইরে থাকায় এবং অসুস্থতার কারণে স্থায়ী কমিটির দুজন সদস্যসহ আমন্ত্রিত ৭০-৭৫ জন নেতা আজকের সভায় উপস্থিত থাকতে পারছেন না। এই সভার বিশেষ দিক হচ্ছে, দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই প্রথম বড় আকারের কোনো সাংগঠনিক সভা হতে যাচ্ছে। লন্ডনপ্রবাসী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চ্যুয়ালি এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন। মা খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের দায়িত্ব পাওয়ার পর এই প্রথম তারেক রহমানের নেতৃত্বে নির্বাহী কমিটির নেতাদের সভা হচ্ছে।
বৈঠকের প্রত্যাশা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘অনেকদিন পর শারীরিক উপস্থিতিতে নেতাকর্মীদের সভা হতে যাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। দলের সর্বোচ্চপর্যায় থেকে যদি আমন্ত্রণ আসলে সবাই খুশি হন।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলন-সংগ্রাম, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দেশনেত্রীর মুক্তি, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। সেখানে কেউ যদি উদ্ভাবনী প্রস্তাব দেযন, তা গ্রহণ করা হবে; এটাই প্রত্যাশা। সংগঠন কীভাবে আরও গতিশীল হবে, সে বিষয়ে আলোচনা হবে।’
ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ কম থাকায় অনেকদিন পর একসঙ্গে বসার সুযোগ হচ্ছে। সার্বিক বিষয় নিয়ে নেতারা মতামত দিবেন।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করার কথা। নানা পরিস্থিতিতে আমাদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হয় না। বর্তমান-অতীত সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখন আমাদের পথ চলতে হবে। পথ চলতে হলে, নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করতে হয়। কোন পথে চললে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবো, সেই বিষয়ে মতবিনিময় হবে।’
তিন দিনব্যাপী সভার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল না। অনেক কাজ ছিল, করতে পারিনি। এখন সব চালু হয়েছে, প্রয়োজনীয় কাজগুলো শুরু করছি। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব, রাজনীতি নিয়ে কথা বলব।’