আজ অমর নায়ক সালমান শাহ’র জন্ম দিন। বেচে থাকলে ৫০ বছরে পা রাখতেন এদেশে সর্বকালের সেরা স্টাইলিস্ট ও ফ্যাশনেবল আইকন হিরো সালমান শাহ।
৯০ দশকের শ্রেষ্ঠতম নায়ক সালমান শাহ ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। তার পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মা নীলা চৌধুরী। তিনি পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন। ছোট ভাই শাহরান চৌধুরী ইভান।
মৃত্যুর ২৫ বছর পরও ফুরায়নি তার আবেদন, কাটেনি তার প্রভাব। বেঁচে থাকতেই তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্রেজে পরিণত হয়েছিলেন। তার স্টাইল, ফ্যাশন ছিল ট্রেন্ড। আর অকালমৃত্যু তাকে দিয়েছে অমরত্ব। আজও তার জনপ্রিয়তায় সমকক্ষ কেউ এই দেশের সিনেমাতে নেই।
কিশোর বয়সে সালমান ছিলেন কণ্ঠশিল্পী। তার অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে শিশুশিল্পী হিসেবে।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন এই নায়ক। প্রথম ছবিতেই সারাদেশের মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে সালমান শাহ ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেন। তার প্রায় প্রতিটি ছবি ছিল ব্যবসা সফল। সালমানের সর্বমোট মুক্তিপ্রাপ্ত ২৭টি ছবির ১৪টিতেই তার নায়িকা ছিলেন শাবনূর।
নায়ক সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় কেয়ামত থেকে কেয়ামত, দেন মোহর, তোমাকে চাই। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় বিক্ষোভ ও আনন্দ অশ্রু, চাওয়া থেকে পাওয়া, বিচার হবে। ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় জীবন সংসার, মহা মিলন, স্বপ্নের পৃথিবী, স্বপ্নের ঠিকানা, এই ঘর এই সংসার।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান সালমান শাহ। সে বছর মুক্তি পায় তার অভিনীত কন্যাদান, মায়ের অধিকার, প্রেমযুদ্ধ, সত্যের মৃত্যু নাই, সুজন সাথী, স্বপ্নের নায়ক, তুমি আমার প্রভৃতি। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় বুকের ভেতর আগুন ও প্রেম পিয়াসী চলচ্চিত্র।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ইস্কাটনের বাসা থেকে গুণী এ অভিনেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তুমুল জনপ্রিয় এ চিত্রনায়কের মৃত্যুর দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ রয়ে গেছে অজানাই। বিষয়টি মেনে নেয়নি, সালমান শাহ’র পরিবার। সালমান শাহ’র মায়ের আইনজীবীর দাবি, তাকে হত্যা করা হলেও, বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
যদিও গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় এ নায়ক আত্মহত্যা করেছিলেন বলে জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ঘটনাটির তদন্তে ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেয় পিবিআই।
পুলিশের তদন্ত বিভাগের মতে, মাত্রাতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা ও চিত্রনায়িকা শাবনূরের সঙ্গে তার অতিরিক্ত অন্তরঙ্গ সম্পর্ক আত্মহত্যার অন্যতম কারণ।